কবি কে
তিনিই কবি যিনি কবিতা লেখেনআবার তিনিও কবি যিনি পদ্যটদ্য লেখেন না।
তিনিই আসলে কবি যিনি পায়ের বেড়ি খুলে ছুঁড়ে ফেলে দেন
আবার তিনিও কবি যিনি এই শৃঙ্খলে আবদ্ধ হতে ভালোবাসেন
কবিকে আসলে বিশ্বাসী হতে হয়
তিনিও কবি যার কোনো কিছুতে বিশ্বাস নেই
কবি আসলে এমন মানুষ যাকে মিথ্যে কথা বলতে হয়
আবার তিনিও কবি যাকে বলা হয়েছে অনেক মিথ্যে কথা
তিনিই হলেন কবি যিনি টাল খেয়ে ভেঙে পড়েন
আবার তিনিও কবি যিনি উদ্ধত ভঙ্গিতে উঠে দাঁড়ান
কবি তিনিই যাকে সবকিছু ছেড়েছুড়ে ফেলে দিতে হয়
আবার তিনিও কবি যিনি কোনো কিছুই ছেড়ে চলে যান না।
একটি আধুনিক প্রেমের কবিতার খসড়া
এখনও শাদা
একে শুধু ভালো করে বর্ণনা করা যায় ধূসরতার পটে
পাখিকে পাথর দিয়ে
সূর্যমুখি
ডিসেম্বরে
পুরনো প্রেমের কবিতা
মাংসের চমকপ্রদ বর্ণনায় ভরা
এটা-সেটা কত যে কচকচানি থাকে
যেমন চোখের পাতার
এখনও লাল
এটা বর্ণনা করা দরকার
ধূসরতা দিয়ে সূর্যকে বৃষ্টি দিয়ে
নভেম্বরের পপি
ঠোঁটকে রাত্রি দিয়ে
রুটির সবচেয়ে
স্পর্শকাতর বর্ণনা হলো
খিদের একটা বিবরণ দাঁড় করানো
রোমকূপের ভেজা অংশ
উষ্ণ অভ্যন্তর
রাতের বেলায় সূর্যমুখি
প্রজননের দেবী সিবিলির স্তন-পেট-উরু
জলের
একটি বসন্তস্বচ্ছ
পরিষ্কার বর্ণনা হলো
তৃষ্ণার বিবরণ
ছাই
মরুভূমি
সৃষ্টি করে দৃষ্টিবিভ্রম
মেঘ আর গাছ সরে এসে
ঢুকে পড়ে আয়নায়
খিদের অভাব
মাংসের
অনুপস্থিতি হলো
ভালোবাসার আরেকটি বর্ণনা
এই হলো সেই আধুনিক প্রেমের পদ্য
অনেক কাজের ভিড়ে
অনেক কাজের মাঝে
খুব জরুরি
আমি ভুলেই গিয়েছিলাম
এটাও খুব দরকারি
মরে যাওয়া
অকিঞ্চিৎকর
আমি এই বাধ্যবাধকতাকে অবহেলা করেছিলাম
অথবা একে পূরণ করছিলাম
হেলাফেলার সঙ্গে
আগামীকালের শুরুতে
সবকিছু বদলে যাবে
বিজ্ঞতার সঙ্গে আশা নিয়ে
সময়ক্ষেপণ না করে
আমি নিষ্ঠার সঙ্গে মরে যাওয়া শুরু করবো
জীবনের মধ্যপর্বে
পৃথিবীতে কেয়ামত আসা আর
আমার মৃত্যুর পর
দেখলাম জীবনের মধ্যপর্বে আমি দাঁড়িয়ে আছি
আমাকেই আমি সৃষ্টি করেছি
গড়ে নিয়েছি এই জীবন
মানুষ পশু প্রাকৃতিক দৃশ্য
আমি বলছি, এটা একটা টেবিল
একটা টেবিল
টেবিলের উপর সটান শুয়ে আছে রুটি ও একটা ছুরি
ছুরির কাজ হচ্ছে রুটি কাটা
মানুষ এই রুটি দিয়েই নিজেদের ঋষ্টপুষ্ট করে
সবারই মানুষকে ভালোবাসা উচিত
রাত্রি আর দিনের কাছ থেকে আমি এটাই শিখেছিলাম
একজন মানুষের কী কী ভালোবাসা উচিত
একজনের প্রশ্নের উত্তরে এই কথাগুলোই বলেছিলাম
ফেরা
হঠাৎ করে খুলে যাবে জানালা
মা ডেকে বলবেন
ঘরে ফেরার সময় হয়েছে
দেয়াল যাবে খুলে আর আমি
কাদামাখা জুতা পায়ে প্রবেশ করবো বেহেশতে
এরপর টেবিলের কাছে সরে আসবো
কোনো কথা জিজ্ঞেস করলে রেগেমেগে উত্তর দেবো
আমি ভালো আছি একা থাকতে
দাও। মাথায় হাত দিয়ে আমি
বসে থাকবো অপেক্ষায়। কেমন করে তাদের বলি
সেই দীর্ঘ
আর জটিল পথের কথা
এখানে এই বেহেশতে মা
বুনে চলেছেন সবুজ স্কার্ফ
চারদিকে মাছির মধুর গুনগুন
ছ’দিন একটানা কাজ করার পর
বাবা চুলার কাছে ঘুমঘুম চোখে ঢুলু ঢুলু
না, একেবারেই আমি তাদের বলতে পারবো না
মানুষ একজন আরেক জনের গলার
কাঁটা হয়ে আছে
বেঁচে যাওয়া মানুষ
আমার বয়স চব্বিশ
আমাকে কসাইখানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল
কিন্তু বেঁচে গেছি।
নিচের কথাগুলো শূন্যতার সমার্থক:
মানুষ আর পশু
প্রেম আর ঘৃণা
বন্ধু আর শত্রু
অন্ধকার আর আলো।
মানুষ আর পশুকে একই পদ্ধতিতে হত্যা করা হচ্ছিল
আমি এটা দেখিনি:
টুকরো টুকরো করে কাটা মানুষে বোঝাই সব ট্রাক
ওরা রক্ষা পায়নি।
আদর্শের কথা শুধুই কচকচি:
সদ্গুণ আর ষণ্ডামি
সত্য আর মিথ্যা
সুন্দর আর কদর্য
সাহস আর ভীরুতা।
সদ্গুণ আর ষণ্ডামিকে একই পাল্লায় মাপা হয়
আমি এটা দেখিনি;
মানুষ একই সঙ্গে কী করে
ষণ্ডামি আর সদ্গুণের অধিকারী হয়।
আমি একজন শিক্ষক ও গুরুজিকে খুঁজছি
হয়তো তিনি আমার দৃষ্টি আর বাচনের ক্ষমতাকে আবার ফিরিয়ে আনতে পারবেন
হয়তো তিনি আবার বস্তুর নাম ও আদর্শকে
অন্ধকার আর আলোকে আলাদা করে শিখিয়ে দিতে পারবেন
আমার বয়স চব্বিশ
আমাকে হত্যা করার জন্যে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল
কিন্তু আমি বেঁচে গেছি।
আমার খুজে পাওয়া http://www.somewhereinblog.net/blog/abirtalukder/29657587
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন